ভিজিটর সংখ্যা

জনপ্রিয়

T@NB!R ব্লগ সংরক্ষাণাগার

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Social

Random Post

নাম

your name

ইমেল *

Your Email

বার্তা *

your message

Pages

Like Us On Facebook

Popular Posts

শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

postheadericon ২০১৬ সালে যেসকল গুণীজন হারালাম আমরা ...! দেখে নিন, ২০১৬-তে কাদেরকে হারালো বাংলাদেশ ও বিশ্ব।



কালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরো একটি বছর। নানা দিক থেকেই ২০১৬ সালটি ছিল ঘটনাবহুল। এর পাশাপাশি আমরা হারিয়েছি দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্টজনকে। সেই বিবেচনায় ২০১৬ সালকে গুণীজন হারানোর বছর বলা যায়।
  

শেখ তৈয়বুর রহমান
একটানা ২০ বছর রাষ্ট্রীয় পতাকা বহনকারী খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শেখ তৈয়বুর রহমান (৮২) মারা যান এ বছরের শুরুর দিনই। গত ১ জানুয়ারি খুলনার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন তিনি।
মাহবুব হোসেন
অর্থনীতিবিদ মাহবুব হোসেন (৭১) মৃত্যুবরণ করে ৪ জানুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে ৩টায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লেভেল্যান্ড ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রিডো বাইপাস সার্জারি ও ভাল্ভ পরিবর্তনের জন্য প্রায় এক মাস আগে সেখানে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মারা যান দেশের কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে যাওয়া এই অর্থনীতিবিদ।
মৃত্যুর আগে মাহবুব হোসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের উপদেষ্টা, নির্বাহী পরিচালক, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) সামাজিক গবেষণা বিভাগের পরিচালক ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বি আইডিএস) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব
একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণে রাজি করিয়ে নিজ হাতে দলিলের খসড়া লিখিয়ে নেয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতীয় জেনারেল জে এফ আর জ্যাকবকে হারিয়েছে আমরা এ বছর। গত ১৩ জানুয়ারি বুধবার সকালে দিল্লির একটি সামরিক হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ৩১ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সুপরিচিত জ্যাকব ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মেজর জেনারেল জ্যাকব মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে জন্মগ্রহণকারী জ্যাকব ১৯ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১৯৭৮ সালে অবসরে যাওয়ার আগে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ও ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও অংশ নেন। অবসরে যাওয়ার আগে তিনি পশ্চিম ভারতীয় রাজ্য গোয়া ও উত্তর ভারতীয় রাজ্য পাঞ্জাবের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আলতাফ মাহমুদ
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ মৃত্যুবরণ করেন এ বছরের ২৪ জানুয়ারি রোববার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে আলতাফ মাহমুদের বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
আলতাফ মাহমুদ ১৯৫৪ সালে গলাচিপার ডাকুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর আলতাফ মাহমুদ ১৯৬৮ সালে পয়গাম পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। স্বাধীনতার পর দৈনিক স্বদেশ, দৈনিক কিষাণ, সাপ্তাহিক খবর, দৈনিক খবরের প্রধান প্রতিবেদকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দৈনিক ডেসটিনির নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আলতাফ মাহমুদ স্ত্রী, দুই মেয়ে এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জেনারেল কে ভি কৃষ্ণা রাও
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কে ভি কৃষ্ণা রাও মৃত্যুবরণ করেন এ বছর।
গত ৩০ জানুয়ারি শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর দিল্লির সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। জেনারেল কৃষ্ণা নাগাল্যান্ড ও মণিপুরে সন্ত্রাস দমনে ১৯৭০ থেকে ’৭২ সাল পর্যন্ত একটি মাউন্টেইন ডিভিশনের নেতৃত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্বাধীন ব্রিগেড ১৯৭১ সালে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল শত্রুমুক্ত করতে ভূমিকা রাখে। এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে পদক পান তিনি।
কায়সুল হক
এ বছর আমরা কবি কায়সুল হককেও হারিয়েছি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
কায়সুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। শুরুতে তাকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার ক্যানসার ধরা পড়ে। পরে তাকে ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। একটু সুস্থ হওয়ার পর কায়সুল হক বাসায় ফিরে আসেন। কিন্তু গত ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।
কবি কায়সুল হক ১৯৩৩ সালের ২৯ মার্চ অবিভক্ত বাংলার মালদহে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম দবিরউদ্দিন আহমদ ও মা জিন্নাতুননেসা। তার পৈতৃক নিবাস রংপুর। তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে রংপুরে। কর্মজীবন কাটে ঢাকায়। ১৯৫০ সালে দৈনিক আজাদ-এ তার প্রথম কবিতা ‘আজ’ প্রকাশিত হয়। পঞ্চাশের দশকের বিউটি বোর্ডিং সাহিত্যচক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- শব্দের সাঁকো, রবীন্দ্রনাথের নিরুপম বাগান, আলোর দিকে যাত্রা, অনিন্দ্য চৈতন্য, অধুনা, সবার পত্রিকা, কালান্তর ও শৈলী। কবিতায় অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০১), সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৫), ড. আসাদুজ্জামান সাহিত্য পুরস্কার (২০০০) লাভ করেন।

আবুল যাকারিয়া
বাংলার শিকড়সন্ধানী গবেষক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া মৃত্যুবরণ করেন এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার। রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ইতিহাসবিদ, প্রত্নতাত্ত্বিক, পুঁথি সাহিত্যের গবেষক, সাহিত্যিক, অনুবাদক, ক্রীড়া সংগঠক, প্রশাসক সব ক্ষেত্রেই তিনি বিরাজ করেছেন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো। প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী এ গবেষক সারাটি জীবন ধরে স্বদেশ ও স্বজাতির শিকড়ের সন্ধানে নিয়োজিত ছিলেন।
যাকারিয়ার জন্ম ১৯২২ সালের ১ জানুয়ারি। ১৯৪৬-৪৭ সালে অবিভক্ত বাংলার শেষ বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৪৮ সালে তিনি ডেপুটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে চাকরি শুরু করেন।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদ থেকে অবসর নেন।
এনামুল হক মোস্তফা শহীদ
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ মারা যান গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
এনামুল হক মোস্তফা শহীদের জন্ম ১৯৩৮ সালে। তিনি ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন, ৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
খালিদ মাহমুদ মিঠু
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রশিল্পী খালিদ মাহমুদ মিঠুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয় এ বছর।
  গত ৭ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডিতে গাছচাপায় নিহত হন খালিদ মাহমুদ। মাত্র ৫৬ বছর বয়সেই চলে গেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নির্মাতা।
ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কে রিকশা করে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় রাস্তার পাশে থাকা একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ তার মাথায় পড়ে এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান মিঠু।
খালিদ মাহমুদ মিঠুর জন্ম ১৯৬০ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন তিনি। নির্মাতা মিঠুর প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘গহীনে শব্দ’। ২০১০ সালের ২৬ মার্চ মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। এই ছবির জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন মিঠু।
মিঠু পরিচালিত আরেকটি ছবি ‘জোনাকির আলো’। খালিদ মাহমুদ মিঠুর স্ত্রী দেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কনকচাঁপা চাকমা।
রফিক আজাদ
বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি রফিক আজাদকে হারিয়েছি আমরা এ বছর। গত ১২ মার্চ শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএমএসএসইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী এই কবির বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার জন্মগ্রহণ করেন কবি রফিক আজাদ। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাবা-মার কঠিন শাসন উপেক্ষা করে ভাষা শহীদদের স্মরণে খালি পায়ে মিছিল করেন তিনি।
চিরদিনই প্রতিবাদী এই কবি তার দ্রোহকে শুধু কবিতার লেখনীতে আবদ্ধ না রেখে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জাতির চরম ক্রান্তিকালে, ১৯৭১ এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি। কর্মজীবনে রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’র সম্পাদক ছিলেন। ‘রোববার’ পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনাও করেন তিনি। কবি রফিক আজাদ দৈনিক আমাদের সময়ের ভাষা বিষয়ক উপদেষ্টা সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রফিক আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে, ‘অসম্ভবের পায়ে’, ‘সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এ কাব্যের জন্য ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক পান তিনি। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কারসহ আরো বেশ কয়েকটি পুরস্কার।
পারভিন সুলতানা দিতি
বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী পারভিন সুলতানা দিতি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এ বছর। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন পারভিন সুলতানা দিতি। ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু এটি শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল আজমল হুদা মিঠু পরিচালিত ‘আমিই ওস্তাদ’। জীবদ্দশায় প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী-স্ত্রী’ ছবিতে আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে দারুণ অভিনয় নৈপুণ্যের জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
এরপর অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম নির্ভরযোগ্য নায়িকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকাকালে তিনি সহশিল্পী সোহেল চৌধুরীকে ভালবেসে বিয়ে করেন। এরপর সোহেল চৌধুরীর মৃত্যুর পর দিতি আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। কিন্তু পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। দুই সন্তান দীপ্ত ও লামিয়াকে নিয়েই ছিল দিতির সংসার।
ছোট পর্দায়ও দিতি ছিলেন নিয়মিত। অনেক একক নাটক, টেলিছবি ও ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছেন। এছাড়া রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেছেন তিনি। গায়িকা হিসেবেও তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বেরিয়েছে তার একক অ্যালবামও।
দিতি অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- হীরামতি, দুই জীবন, ভাই বন্ধু, উছিলা, লেডি ইন্সপেক্টর, খুনের বদলা, আজকের হাঙ্গামা, স্নেহের প্রতিদান, শেষ উপহার, চরম আঘাত, স্বামী-স্ত্রী, অপরাধী, কালিয়া, কাল সকালে, মেঘের কোলে রোদ, আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা, মুক্তি, কঠিন প্রতিশোধ, তবুও ভালোবাসি, পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী, হৃদয় ভাঙা ঢেউ, মাটির ঠিকানা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত, দুর্জয়, সুইটহার্ট, ধূমকেতু।
শহীদুল ইসলাম খোকন
এ বছর আমরা হারিয়েছি গুণী চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি শহীদুল ইসলাম খোকনকে। গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর উত্তরার একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
মুখগহ্বরে মটর নিউরো ডিজিসে (এএলএস) আক্রান্ত হয়েছিলেন শহীদুল। গত ৩১ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। শোচনীয় অবস্থায় অক্সিজেনের দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল তাকে। খোকনের অসুস্থতায় এগিয়ে এসেছিল সরকার।
২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হয়। এরপর দেশে ফেরার পর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ডা. আরেফিনের তত্ত্বাবধানে খোকনের পাকস্থলীতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টিউব স্থাপন করা হয়।
মাসুদ পারভেজের (সোহেল রানা) সঙ্গে দশ বছর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর ‘রক্তের বন্দী’ চলচ্চিত্র নির্মাণের মধ্যদিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শহীদুল ইসলাম খোকন। প্রথম ও দ্বিতীয় ছবি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হলেও তৃতীয় ছবিতে নবাগত নায়ক রুবেলকে নিয়ে ‘লড়াকু’ ছিল ব্যাপক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। এরপর রুবেলকে নিয়েই নির্মাণ করেন বীরপুরুষ, বজ্রমুষ্টি, বিপ্লব, উত্থান পতন, শত্রু ভয়ংকর, অপহরণ, সতর্ক শয়তান, দুঃসাহস, বিশ্বপ্রেমিক, ঘাতক, নরপিশাচ, পাগলা ঘণ্টার মতো একাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র।
প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন মৃত্যুবরণ করেন এ বছর ১১ মে। ভারতের মুম্বাইয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। মৃত্যুকালে প্রমোদ মানকিন স্ত্রী মমতা আরেং, পাঁচ কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
প্রমোদ মানকিন ১৯৩৯ সালের ১৮ এপ্রিল নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার বাকালজোড়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এক গারো পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা স্বর্গীয় মেঘা তজু এবং মাতা স্বর্গীয়া হৃদয় শিসিলিয়া মানকিন। তিনি ৮ ভাই-বোনদের মধ্যে পঞ্চম। ১৯৬৩ সালে নটরডেম কলেজ থেকে বিএ, ১৯৬৮ সালে বি এড এবং ১৯৮২ সালে এএলবি পাস করেন।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে তার সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ শুরু। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে শরনার্থী শিবিরে রেডক্রসের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১, ২০০১, ২০০৮ সালে হালুয়াঘাট থেকে এবং ২০১৪ সালে হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথমে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও মৃত্যুর সময় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
সাদেক খান
ভাষা সৈনিক ও প্রবীণ সাংবাদিক সাদেক খানকেও হারাই আমরা এ বছর। গত ১৬ মে সোমবার বেলা ১১টায় বারিধারায় নিজ বাসায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
সাদেক খান ১৯৩৩ সালের ২১ জুন মুন্সীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ওই সময় তার বাবা সাবেক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের কার মরহুম আবদুল জব্বার খান মুন্সীগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহের ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে।
সাদেক খান ছিলেন পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার অন্য ভাই-বোনরা হলেন সাবেক মন্ত্রী কবি মরহুম আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান, প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম এনায়েতুল্লাহ খান, সাবেক মন্ত্রী সেলিমা রহমান, বর্তমান বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং ইংরেজি দৈনিক নিউএজ প্রকাশক শহিদুল্লাহ খান বাদল।
তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সাংগঠনিক নেতৃত্বের ভূমিকায় লিপ্ত হয়ে কেন্দ্রীয় সংগ্রাম কমিটির সভা থেকে গ্রেফতার হন এবং একমাস কারাভোগ করেন। ১৯৫৫ থেকে ’৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সহ-সম্পাদক পদে কাজ করেন। এরপর তিনি চলচ্চিত্র জগতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন। সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। সাংবাদিক সাদেক বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকগুলোতে নিয়মিত কলাম লিখতেন। এছাড়াও তিনি টেলিভিশন টকশো ও বিভিন্ন সভা-সমিতিতে জাতীয় ইস্যুতে নিজস্ব চিন্তাধারা ব্যক্ত করতেন।
মুকুল তালুকদার
ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) সাবেক সভাপতি মুকুল তালুকদার মৃত্যুবরণ করেন গত ১৮ মে বুধবার বেলা ১১টায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
৩ মে মুকুল তালুকদারকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। পরের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ১৩ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। ১৮ মে বেলা ১১টায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়।
নূরজাহান বেগম
বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতার এই পথিকৃৎ ২৩ মে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
নূরজাহান বেগমের হাত ধরে যে নারীরা লেখালেখির জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, তাদের অনেকে এখন প্রবীণ। বেগম বাংলায় নারীদের প্রথম সাপ্তাহিক। ১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই কলকাতা থেকে এটি প্রকাশিত হয়। সাহিত্যক্ষেত্রে মেয়েদের এগিয়ে আনা ও সাহিত্যচর্চার পৃথক ক্ষেত্র হিসেবে বেগম বের হয়। ১৯৫০ সালে বেগম চলে আসে ঢাকায়। বেগম-এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এবং প্রথম সম্পাদিকা ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। তবে চার মাস পর থেকেই পত্রিকাটির সম্পাদনা শুরু করেন মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ও ফাতেমা খাতুনের একমাত্র কন্যা নূরজাহান বেগম।
পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা ছাপা হয়েছিল ৫০০ কপি। মূল্য ছিল চার আনা। প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছিল বেগম রোকেয়ার ছবি।
এখন আর সাপ্তাহিক নয়, এটি মাসিক পত্রিকা হিসেবে বের হচ্ছে। পত্রিকাটির সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন তার বড় মেয়ে ফ্লোরা নাসরীন খান। এই পত্রিকায় কার লেখা যাবে, কার ছবি যাবে, কোন কোন বিষয় থাকবে, তার সবই ঠিকঠাক করতেন নূরজাহান বেগম।
নূরজাহান বেগমের জন্ম ১৯২৫ সালের ৪ জুন চাঁদপুর জেলার চালিতাতলী গ্রামে। তার বাবা ১৯১৮ সালে কলকাতা থেকে মাসিক সওগাত পত্রিকা বের করেন।
নূরজাহান বেগম বিএ পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। বাবার পরে নূরজাহান বেগমের পাশে দাঁড়ান তার স্বামী কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার নামের শিশু সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা রোকনুজ্জামান খান। তিনি ‘দাদাভাই’ নামে বেশি পরিচিত। নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি সুফিয়া কামালসহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের কাছাকাছি থেকে বড় হয়েছেন নূরজাহান বেগম। ২০১১ সালে নূরজাহান বেগম সাংবাদিকতায় একুশে পদক পান।
ফাহিম মুনয়েম
মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ ফাহিম মুনয়েম মৃত্যুবরণ করেন গত ১ জুন। গুলশানের নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। ফাহিম মুনয়েম মাছরাঙা টেলিভিশনে যোগদানের আগে দৈনিক সংবাদ, মর্নিং সান, ইউএনবি ও ডেইলি স্টারের ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
ডেইলি স্টারে থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদের প্রেস সচিবের দায়িত্ব পান তিনি। ওই দায়িত্ব শেষে আবার ফেরেন ডেইলি স্টারে। ২০১০ সালে মাছরাঙা  টেলিভিশনের যাত্রা শুরুর সময় ফাহিম মুনয়েম যোগ দেন প্রধান নির্বাহী হিসেবে। তিনি বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ নুরুদ্দিনের ছেলে।
কিংবদন্তি হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলী
কিংবদন্তি হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলীকেও হারিয়েছে আমরা এ বছর। ৭৪ বছর বয়সে অ্যারিজোনার একটি হাসপাতালে গত ৩ জুন শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। আগের দিন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে আলীর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। প্রায় তিন দশক ধরে পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত ছিলেন সাবেক এই বক্সিং তারকা। ১৯৮৪ সালে প্রথম রোগটি ধরা পড়ে আলীর। তবে এবারে অবস্থার বেশি অবনতি হওয়ার হাসপাতালে পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।
মোহাম্মদ আলী ১৯৮১ সালে বক্সিং থেকে অবসর নেন। এরপর থেকেই কিছুদিন পরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। সর্বশেষ গত বছর মূত্রনালিতে সংক্রমণের কারণে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে কাটাতে হয় তাকে।
অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা মৃত্যুবরণ করেন এ বছর। গত ১৩ জুন সোমবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। মনিরুজ্জামান মিঞা বিএনপিপন্থি অন্যতম বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালের ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯২ সালের ৩১ অক্টোবর বিএনপি সরকারের সময় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরিয়ে সেনেগালের রাষ্ট্রদূত করা হয়। তিনি ব্যক্তিজীবনে চিরকুমার ছিলেন।
সন্তোষ মণ্ডল
সাংবাদিক সন্তোষ মণ্ডলকে হারিয়েছি আমরা। গত ২০ জুন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সন্তোষ মণ্ডল মারা যান। সন্তোষ মণ্ডলের বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করা এই সাংবাদিক গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে যান।
মুবারক বেগম শেখ
ভারতের কিংবদন্তি গজল ও প্লেব্যাক শিল্পী মুবারক বেগম মৃত্যুবরণ করেন এ বছর। গত ১৮ জুলাই সোমবার রাতে নিজ বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
তার গাওয়া ‘কাভি তানহাই মে হামারি ইয়াদ আয়েগি’, ‘মুঝকো আপনি গালে লাগালো’, ‘অ্যায় মেরি হামরাহি’, ‘নিন্দ উড় যায়ে তেরি, চ্যায়েইন সে সোনে ওয়ালা’, ‘ও না আয়েগি পালাট কে’, ‘ওয়াদা হামসে কিয়া, দিল কিসিকো দিয়া’ শিরোনামের গানগুলো ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়।
মুবারক বেগমের জন্ম ভারতের রাজস্থানে। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তিনি মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান। সেই বয়সেই সিনেমার জন্য প্লেব্যাক করেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ১১০টির মতো চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
মহাশ্বেতা দেবী
দুই বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী চলে গেলেন এ বছরের ২৮ জুলাই। দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ঢাকার এক শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই বিশিষ্ট লেখিকা-সাহিত্যিক-সমাজসেবী। বাবা মণীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল সেন যুগের একজন বিশিষ্ট কবি এবং সাহিত্যিক। তার কাকা ঋত্বিক ঘটক ছিলেন বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক। মা ধারিত্রী দেবীও একজন প্রসিদ্ধ লেখিকা ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ঢাকায় স্কুল জীবন শেষ করেন তিনি। এরপর দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন মহাশ্বেতা দেবী। এপারে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাধের শান্তি নিকতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি নিয়ে স্নাতক হন, এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর লাভ করেন তিনি।
পড়াশোনার পাঠ শেষ করে বিশিষ্ট নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন মহাশ্বেতা দেবী। কিন্তু সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। ১৯৫৯ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাদের। তার একমাত্র ছেলে নবারুণ ভট্টাচার্যও বাংলা সাহিত্যের একজন সুপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিক ছিলেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে তিনিও মারা যান।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ হিসেবে ‘অরণ্যের অধিকার’ উপন্যাসের জন্য ১৯৭৯ সালে তিনি পান সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার। ১৯৮৬ সালে ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন, ১৯৯৬ সালে পান জ্ঞানপীঠ, ১৯৯৭ সালে রমণ ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, ২০০৬ সালে ভারত সরকারের পদ্মবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি, ২০১০ সালে যশবন্তরাও চ্যবন জাতীয় পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে ২০১১ সালে পান বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার।
সাবেক মন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল
সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান পটল (৭০) মৃত্যুবরণ করেন এ বছর। গত ১১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় কলকাতার রবীন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নাটোরে জন্মগ্রহণ করা বিএনপির এই নেতা ১৯৭৫ পূর্ব সময়ে ছাত্রলীগ থেকে রাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন।
অভিনেতা ফরিদ আলী
অভিনেতা মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আলীকেও হারাই এ বছর। গত ২২ আগস্ট রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। স্ত্রী, চার সন্তান ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
সবার কাছে একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র কৌতুকাভিনেতা হিসেবে পরিচিত থাকলেও ফরিদ আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন সাংবাদিকও। ৭২ বছর বয়সী এ অভিনেতা পুরোনো ঢাকার ঠাটারি বাজারের বাসিন্দা। সর্বশেষ গত ঈদে তিনি আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘পূর্ণিমার চাঁদে মেঘ’ নাটকে অভিনয় করেছেন।
কবি শহীদ কাদরী
বাংলা ভাষার অন্যতম কবি শহীদ কাদরী মৃত্যুবরণ করেন গত ২৮ আগস্ট রোববার সকালে। নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তিনি স্ত্রী নীরা কাদরী, এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব রেখে যান।
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন শহীদ কাদরী। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে ‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’, ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’। ১৯৭৮ সাল থেকে কবি শহীদ কাদরী প্রবাসী। প্রথমে জার্মানি, পরে লন্ডন এবং বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন।
১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি ও ২০১১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে হারাই আমরা এ বছর। গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। সৈয়দ হক স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হকও কথাসাহিত্যিক।
কবিতা, নাটক, গল্প, উপন্যাস, চলচ্চিত্রসহ সাহিত্যের সব শাখায় অসামান্য অবদান রাখা সৈয়দ হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
গুণী এই সাহিত্যিকের খেলারাম খেলে যা, নীল দংশন, মৃগয়া, সীমানা ছাড়িয়ে, আয়না বিবির পালা`সহ বহু পাঠকপ্রিয় বই রয়েছে। তার লেখা দুটি অমর নাটক পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় ও নুরুল দীনের সারাজীবন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার বহু পুরস্কার পেয়েছেন সব্যসাচী এই লেখক।
সাবেক মন্ত্রী আ স ম হান্নান শাহ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আ স ম হান্নান শাহ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
৬ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়।
হান্নান শাহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। অবসরের পর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন থাকার সময় পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।
কবি জোবেদা খাতুন
কবি জোবেদা খাতুন মারা যান এ বছর। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। ‘আজাদ প্রডাক্টস’ কর্তৃক পুরস্কৃত কবি-সাহিত্যিক জোবেদা খাতুন দেশের একজন ‘রত্মগর্ভা’ মা।
তিনি চার কন্যা ডা. খোদেজা বেগম মৃধা, খালেতুন খলিল, কবি খোশনূর, বিনু আহমেদ ও এক পুত্র উপমহাদেশের বিশিষ্ট তবলাবাদক মো. জাহাঙ্গীর মির্জাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মহিলা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার জন্য কবি জোবেদা খাতুনের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। জোবেদা খাতুন ছিলেন বঙ্গবন্ধুরও অনেক ঘনিষ্ঠ। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়া ভূমিকা রেখেছেন। তার সব সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সুখ্যাত। আঁখি আলমগীর তার নাতনি।
সংগীতশিল্পী সালমা শিলা সুলতানা
বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী সালমা শিলা সুলতানা মৃত্যুবরণ করেন গত ২৯ সেপ্টেম্বর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সালমা শিলা সুলতানা স্বনামধণ্য সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর প্রথম স্ত্রী এবং জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানার ছোট বোন। তার ভাই সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন ও মোহাম্মদ সুমন।
রতনতনু ঘোষ
বহুমাত্রিক লেখক ও শিক্ষক রতনতনু ঘোষ না ফেরার দেশে চলে যান এ বছর। গত ৩ অক্টোবর সোমবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি তেজগাঁও শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে লেখালেখি করেছেন। কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস রচনার পাশাপাশি তিনি ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকাসহ প্রথম সারির দৈনিকগুলোতে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
অজয় রায়
প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ অজয় রায়কেও আমরা হারিয়েছি এ বছর। গত ১৭ অক্টোবর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন তিনি।
১৯২৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন অজয় রায়। বাবা প্রমথনাথ রায় বারানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক ছিলেন। মা কল্যাণী রায়। ভারতের বারানসিতে স্কুলজীবনেই যুক্ত হন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে ফিরে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর কিশোরগঞ্জের বনগ্রামে দাদার বাড়িতে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পঞ্চাশের দশকে কমিউনিস্ট নেতা নগেন সরকার, ওয়ালী নেওয়াজ খান, মণি সিংহের সান্নিধ্যে আসেন অজয় রায়।
১৯৫৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠিত হলে তিনি ন্যাপে যোগ দেন এবং ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বেরিয়ে এসে অজয় রায় ‘কমিউনিস্ট কেন্দ্র’ গঠন করেন। ১১ দলীয় জোট গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ‘কমরেড’ অজয় রায় বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন। এছাড়া, স্বাধীনতার আগে-পরে ৫ বছরের বেশি সময় আত্মগোপনে কাটিয়েছেন তিনি।
তিমির দত্ত
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ও মুক্তিযোদ্ধা তিমির লাল দত্ত মৃতুবরণ করেন গত
  ২৩ অক্টোবর। সকালে তিমির লাল রাজধানীর বাসাবোর বাসভবনে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
সাংবাদিক তিমির লাল দত্ত তার কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক খবর পত্রিকার মাধ্যমে, এরপর তিনি সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেন। বাসস থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অবসরে যান তিনি।
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খানকে হারাই আমরা এ বছর। গত ৫ নভেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। এম আর খান কোমরে ব্যথা, হার্ট, উচ্চ রক্তচাপ ও নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এম আর খানের জন্ম ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট সাতক্ষীরার রসুলপুরে। ১৯৫৩ সালে এমবিবিএস পাস করেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিটিএমঅ্যান্ডএইচ, এমআরসিপি, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিসিএইচ, ঢাকার পিজি থেকে এফসিপিএস, ইংল্যান্ড থেকে এফআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন। পেনশনের টাকা দিয়ে গড়েন ডা. এম আর খান-আনোয়ারা ট্রাস্ট। দুস্থ মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, তাদের আর্থিক-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এ ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি নিরন্তর কাজ করে গেছেন। তার উদ্যোগে গড়ে ওঠে জাতীয় পর্যায়ের শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, যশোর শিশু হাসপাতাল, সাতক্ষীরা ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, রসুলপুর উচ্চবিদ্যালয়, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতাল, নিবেদিতা নার্সিং হোমসহ বহু প্রতিষ্ঠান।
১৯৭১ সালে তিনি ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ-আইপিজিএমআর’র (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ও ১৯৭৩ সালে এই ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালকের দায়িত্ব পান। ডা. খান ১৯৭৮ সালের নভেম্বরে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালকের পদে যোগ দেন। শিশুদের জন্য বিশেষায়িত এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায়ও তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ওই বছরই আবার আইপিজিএমআর’র শিশু বিভাগে যোগ দেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবন শেষে ১৯৮৮ সালে অধ্যাপক এম আর খান অবসর নেন।
ফিদেল কাস্ত্রো
এ বছর না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। গত ২৫ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতে কিউবার রাজধানী হাভানায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ৯০ বছর বয়সী এই নেতার মৃত্যুর খবর টেলিভিশনে ঘোষণা করেন রাউল কাস্ত্রো।
ফিদেল আলেসান্দ্রো কাস্ত্রোর জন্ম ১৯২৬ সালের ১৩ আগস্ট। ১৯৫৯ সালে তিনি মার্কিন সমর্থিত একনায়ক ফুলগেন্সিও বাতিস্তার সরকারকে উৎখাত করেন। বাতিস্তা সরকারকে উচ্ছেদের পর ১৯৫৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত কিউবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
২০০৮ সালে ভাই রাউল কাস্ত্রোর কাছে ক্ষমতা অর্পণ করে অবসরে যান ফিদেল।
মাহবুবুল হক শাকিল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল মৃত্যুবরণ করেন বছরের শেষের দিকে। গত ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর হোটেল সামদাদো রেস্তোরাঁ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর।
শাকিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্ত্রী পেশায় আইনজীবী। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) ও উপ-প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন ছাত্রলীগের এক সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তাকে বিশেষ সহকারী হিসেবে সঙ্গে রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর
হাইকোর্টের বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী
  মৃত্যুবরণ করেন গত ১৫ ডিসেম্বর। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিচারপতি চৌধুরী স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরী ১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত জিতেন্দ্র নারায়ণ দেব চৌধুরী ও মা খুশী রানী চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করার পর ১৯৯০ সালের ১৬ এপ্রিল জেলা আদালতে আইন পেশা শুরু করেন। ১৯৯২ সালের ১১ মে হাইকোর্টে এবং ২০০১ সালের ৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে দুই বছরের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছেন যাদের প্রকৃত অর্থে কোনো মৃত্যু নেই। কর্মগুণে তারা মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকেন। দূর থেকে সেইসব মানুষরা পথ দেখান আলোকবর্তিকা হয়ে। মহাকালের নিয়মে হারানো সেই মানুষগুলোর প্রতি রইলো আমাদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ভালোবাসা।



🎭 ফেইসবুক গ্রুপ থেকে শিক্ষণীয় ও প্রয়োজনীয় সকল বাংলা সরাসরি 📥ডাউনলোড 👆 করতে!
সকল প্রকার শিক্ষণীয় ই-বুক বা পিডিএফ বই এখানে আপলোড করা হয়েছে ... জাস্ট ক্লিক এন্ড ডাউনলোড ...



প্রয়োজনীয় সব বাংলা 🕮 ই-বুক বা বই, 💻 সফটওয়্যার ও 🎬 টিটোরিয়াল কালেকশ সংগ্রহ করতে!
🎯 আপনারা সামান্য একটু সময় ব্যয় করে,শুধু এক বার নিচের লিংকে ক্লিক করে এই কালেকশ গুলোর মধ্যে অবস্থিত বই ও সফটওয়্যার এর নাম সমূহের উপর চোখ বুলিয়ে 👓 👀 নিন।”তাহলেই বুঝে যবেন কেন এই ফাইল গুলো আপনার কালেকশনে রাখা দরকার! আপনার আজকের এই ব্যয়কৃত সামান্য সময় ভবিষ্যতে আপনার অনেক কষ্ট লাঘব করবে ও আপনার অনেকে সময় বাঁচিয়ে দিবে।
    বিশ্বাস করুন আর নাই করুনঃ-“বিভিন্ন ক্যাটাগরির এই কালেকশ গুলোর মধ্যে দেওয়া বাংলা ও ইংলিশ বই, সফটওয়্যার ও টিউটোরিয়াল এর কালেকশন দেখে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন !”
    আপনি যদি বর্তমানে কম্পিউটার ব্যবহার করেন ও ভবিষ্যতেও কম্পিউটার সাথে যুক্ত থাকবেন তাহলে এই ডিভিডি গুলো আপনার অবশ্যই আপনার কালেকশনে রাখা দরকার !
    মোট কথা আপনাদের কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান ও কম্পিউটারের জন্য প্রয়োজনীয় সব বই, সফটওয়্যার ও টিউটোরিয়াল এর সার্বিক সাপোর্ট দিতে আমার খুব কার্যকর একটা উদ্যোগ হচ্ছে এই ডিভিডি প্যাকেজ গুলো।আশা করি এই কালেকশন গুলো শিক্ষার্থীদের সকল জ্ঞানের চাহিদা পূরন করবে…!
    আমার আসল উদ্দেশ্য হল, কম্পিউটার ও মোবাইল এইডেড লার্নিং ডিভিডি কার্যক্রম এর মাধ্যমে সফটওয়্যার, টিটোরিয়াল ও এইচডি কালার পিকচার নির্ভর ই-বু বা বইয়ের সহযোগিতায় শিক্ষাগ্রহন প্রক্রিয়াকে খুব সহজ ও আনন্দদায়ক করা। এবং সকল স্টুডেন্ট ও টিচারকে কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তির সম্পৃক্তকরণ এবং সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রযুক্তিবান্ধব করা এবং একটা বিষয় ক্লিয়ার করে বুঝিয়ে দেওয়া যে প্রযুক্তি শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে এবং জ্ঞান অর্জনের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করে…
    🎯 কালেকশ সম্পর্কে বিস্তারিত 👀 জানতেঃ   নিচের লিংকে 👆 ক্লিক করুন
    📲 মোবাইল থেকে বিস্তারিত দেখতে
    🎯 সুন্দর ভাবে বুঝার জন্য নিচের লিঙ্ক থেকে ই-বুক্টি ডাউনলোড করে নিন...
    📥 ডাউনলোড লিংকঃ http://vk.com/doc229376396_437430568


যাদের বইয়ের টিউন গুলো ভালো লাগে ... কিন্তু প্রত্যেক টিউন নিয়মিত আপনার ফেসবুক ওয়ালে দেখতে পাচ্ছেন না ...তারা কষ্ট করে আমাকে ফলো করে রাখুন

    👨 Tanbir Ahmad



    ...অথবা পেইজ নোটিফিকেশন চালু করে রাখুন... প্রয়োজনীয়_বাংলা_বই _Useful -Bangla- e-books


ফেইসুক এপসেঃ পেইজের হোমে গিয়ে উপরের অপশন বারের More অর্থাৎ ••• এই আইকনে ক্লিক করুন Notification ক্লিক করে Status Updates ও অন্য সব সিলেক্ট করে দিন ...




















প্রয়োজনীয় সব বাংলা 🕮ই-বুক

প্রয়োজনীয় সব বাংলা 🕮ই-বুক বা বই, 💻সফটওয়্যার ও 🎬টিটোরিয়াল কালেকশ সংগ্রহ করতে!
আপনারা সামান্য একটু সময় ব্যয় করে ,শুধু এক বার নিচের লিংকে ক্লিক করে এই কালেকশ গুলোর মধ্যে অবস্থিত বই ও সফটওয়্যার এর নাম সমূহের উপর চোখ বুলিয়ে 👓👀 নিন।”তাহলেই বুঝে যবেন কেন এই ফাইল গুলো আপনার কালেকশনে রাখা দরকার! আপনার আজকের এই ব্যয়কৃত সামান্য সময় ভবিষ্যতে আপনার অনেক কষ্ট লাঘব করবে ও আপনার অনেকে সময় বাঁচিয়ে দিবে।
বিশ্বাস করুন আর নাই করুনঃ-“বিভিন্ন ক্যাটাগরির এই কালেকশ গুলোর মধ্যে দেওয়া বাংলা ও ইংলিশ বই, সফটওয়্যার ও টিউটোরিয়াল এর কালেকশন দেখে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন !”
আপনি যদি বর্তমানে কম্পিউটার ব্যবহার করেন ও ভবিষ্যতেও কম্পিউটার সাথে যুক্ত থাকবেন তাহলে এই ডিভিডি গুলো আপনার অবশ্যই আপনার কালেকশনে রাখা দরকার !
মোট কথা আপনাদের কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান ও কম্পিউটারের জন্য প্রয়োজনীয় সব বই, সফটওয়্যার ও টিউটোরিয়াল এর সার্বিক সাপোর্ট দিতে আমার খুব কার্যকর একটা উদ্যোগ হচ্ছে এই ডিভিডি প্যাকেজ গুলো।আশা করি এই কালেকশন গুলো শিক্ষার্থীদের সকল জ্ঞানের চাহিদা পূরন করবে…!
আমার আসল উদ্দেশ্য হল, কম্পিউটার ও মোবাইল এইডেড লার্নিং ডিভিডি কার্যক্রম এর মাধ্যমে সফটওয়্যার, টিটোরিয়াল ও এইচডি কালার পিকচার নির্ভর ই-বু বা বইয়ের সহযোগিতায় শিক্ষাগ্রহন প্রক্রিয়াকে খুব সহজ ও আনন্দদায়ক করা।
এবং সকল স্টুডেন্ট ও টিচারকে কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তির সম্পৃক্তকরণ এবং সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রযুক্তিবান্ধব করা এবং একটা বিষয় ক্লিয়ার করে বুঝিয়ে দেওয়া যে প্রযুক্তি শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে এবং জ্ঞান অর্জনের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করে…
🎯 কালেকশ সম্পর্কে বিস্তারিত 👀জানতেঃ নিচের লিংকে 👆ক্লিক করুন
www.facebook.com/tanbir.ebooks/posts/777596339006593

এখানে👆 ক্লিক করুন

🎯 সুন্দর ভাবে বুঝার জন্য নিচের লিঙ্ক থেকে ই-বুক্টি ডাউনলোড করে নিন...
📥 ডাউনলোড 👆 লিংকঃ এখানে👆ক্লিক

আপডেট পেতে

আপডেট ই-বুক

Recent Posts

মন্তব্য দিন

আমার সম্পর্কে !